চিত্রাঙ্গদা
ভ্রমণ করেছি আমি; সপ্তদ্বীপমাঝে
যেখানে যা-কিছু আছে দুর্লভ সুন্দর,
অচিন্ত্য মহান্, সকলি দেখেছি চোখে;
কী চাও, কাহারে চাও, যদি বল মোরে
মোর কাছে পাইবে বারতা।
চিত্রাঙ্গদা। ত্রিভুবনে
পরিচিত তিনি, আমি যারে চাহি।
অর্জুন। হেন
নর কে আছে ধরায়। কার যশোরাশি
অমরকাঙ্খিত তব মনোরাজ্যমাঝে
করিয়াছে অধিকার দুর্লভ আসন।
কহো নাম তার, শুনিয়া কৃতার্থ হই।
চিত্রাঙ্গদা। জন্ম তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতিকুলে,
সর্বশ্রেষ্ঠ বীর।
অর্জুন। মিথ্যা খ্যাতি বেড়ে ওঠে
মুখে মুখে কথায় কথায়; ক্ষণস্থায়ী
বাষ্প যথা উষারে ছলনা ক’রে ঢাকে
যতক্ষণ সূর্য নাহি ওঠে। হে সরলে,
মিথ্যারে কোরো না উপাসনা, এ দুর্লভ
সৌন্দর্যসম্পদে। কহ শুনি সর্বশ্রেষ্ঠ
কোন্ বীর,ধরণীর সর্বশ্রেষ্ঠ কূলে।
চিত্রাঙ্গদা। পরকীর্তি-অসহিষ্ণু কে তুমি সন্ন্যাসী!
কে না জানে কুরুবংশ এ ভুবনমাঝে
রাজবংশচূড়া।
অর্জুন। কুরুবংশ!
চিত্রাঙ্গদা। সেই বংশে
কে আছে অক্ষয়যশ বীরেন্দ্রকেশরী
নাম শুনিয়াছ?
অর্জুন। বলো, শুনি তব মুখে।
চিত্রাঙ্গদা। অর্জুন, গাণ্ডীবধনু, ভুবনবিজয়ী।
সমস্ত জগৎ হতে সে অক্ষয় নাম,
করিয়া লুন্ঠন, লুকায়ে রেখেছি যত্নে