চিত্রাঙ্গদা
অনঙ্গ-আশ্রম
চিত্রাঙ্গদা মদন ও বসন্ত
চিত্রাঙ্গদা।    তুমি পঞ্চশর?
 মদন।                  আমি সেই মনসিজ,
টেনে আনি নিখিলের নরনারী-হিয়া
বেদনাবন্ধনে।
চিত্রাঙ্গদা।                  কী বেদনা কী বন্ধন
জানে তাহা দাসী। প্রণমি তোমার পদে।
প্রভু, তুমি কোন্‌ দেব?
 বসন্ত।                  আমি ঋতুরাজ।
জরা মৃত্যু দৈত্য নিমেষে নিমেষে
বাহির করিতে চাহে বিশ্বের কঙ্কাল;
আমি পিছে পিছে ফিরে পদে পদে তারে
করি আক্রমণ; রাত্রিদিন সে সংগ্রাম।
আমি অখিলের সেই অনন্ত যৌবন।
চিত্রাঙ্গদা।   প্রণাম তোমারে ভগবন্‌। চরিতার্থ
দাসী দেব-দরশনে।
 মদন।                  কল্যাণী, কী লাগি
এ কঠোর ব্রত তব? তপস্যার তাপে
করিছ মলিন খিন্ন যৌবনকুসুম—
অনঙ্গ-পূজার নহে এমন বিধান।
কে তুমি, কী চাও ভদ্রে।
চিত্রাঙ্গদা।                  দয়া কর যদি,
শোনো মোর ইতিহাস। জানাব প্রার্থনা
তার পরে।
    মদন।                  শুনিবারে রহিনু উৎসুক।
চিত্রাঙ্গদা।    আমি চিত্রাঙ্গদা মণিপুররাজকন্যা।
মোর পিতৃবংশে কভু পুত্রী জন্মিবে না—
দিয়াছিলা হেন বর দেব উমাপতি