ভগ্নহৃদয়
পরদিন বৃন্ত হতে ঝরে পড়ে যায়।
মেঘের দুঃস্বপ্নে মগ্ন দিনের মতন
কাঁদিয়া কাটিবে কি রে সারাটি যৌবন?
কেঁদে কেঁদে শ্রান্ত হয়ে দীন অতিশয়—
আপনার পানে তবে     চাহিয়া দেখিবি যবে
দেখিবি জীবনদিন সন্ধ্যা হয় হয়!
যে মেঘ-মাঝারে থাকি উদিলি প্রভাতে
সেই মেঘমাঝে থাকি অস্ত গেলি রাতে।
মুরলা।                  কি জানি কেমন
মুরলার সুখের কি দুঃখের জীবন!
সুখ দুঃখ দিনরাত মিলিয়া উভয়ে
রেখেছে সায়াহ্ন করি এ শান্ত হৃদয়ে।
হেন আলিঙ্গনে তারা রয়েছে সদাই
যেন তারা দুটি সখা, যেন দুটি ভাই।
জোছনা ও যামিনীতে প্রণয় যেমন
তেমনি মিলিয়া তারা রয়েছে দুজন।
সুখের মুখেতে থাকে দুখের কালিমা,
দুখের হৃদয়ে জাগে সুখের প্রতিমা।
একা যবে বসে থাকি স্তব্ধ জোছনায়,
বহে বাতায়ন-পানে নিশীথের বায়,
বড়ো সাধ যায় মনে যারে ভালোবাসি
একবার মুহূর্ত সে বসে কাছে আসি,
দুটি শুধু কথা কহে— একটু আদর—
সেই স্তব্ধ জোছনায় কাঁদিয়া কাঁদিয়া হায়
মরিয়া যাই গো তারি বুকের উপর।
যখনি কবিরে দেখি সব যাই ভুলে,
কিছুই চাহি না আর— কিছুই ভাবি না আর—
শুধু সেই মুখে চাই দুটি আঁখি তুলে।
দেখি দেখি— কি যে দেখি, কি বলিব কি সে!
হৃদয় গলিয়া যায় জোছনায় মিশে।
জোছনার মত সেই বিগলিত হিয়া
প্রাণের ভিতরে ধরি একেবারে মগ্ন করি