সুন্দর
কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন দিয়ে যায়, শেষে দাও মুছে।
ওহে চঞ্চল, বেলা না যেতে খেলা কেন তব যায় ঘুচে॥
চকিত চোখের অশ্রুজল বেদনায় তুমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে চল—
কোথা সে পথের শেষ কোন্‌ সুদূরের দেশ
সবাই তোমায় তাই পুছে॥
বাঁশরির ডাকে কুঁড়ি ধরে শাখে, ফুল যবে ফোটে নাই দেখা।
তোমার লগন যায় যে কখন, মালা গেঁথে আমি রই একা।
‘এসো এসো এসো’ আঁখি কয় কেঁদে। তৃষিত বক্ষ বলে ‘রাখি বেঁধে’।
যেতে যেতে ওগো প্রিয়, কিছু ফেলে রেখে দিয়ো
ধরা দিতে যদি নাই রুচে॥


ও কি এল ও কি এল না, বোঝা গেল না—
ও কি মায়া কি স্বপনছায়া ও কি ছলনা॥
ধরা কি পড়ে ও রূপেরই ডোরে,
গানেরই তানে কি বাঁধিবে ওরে—
ও যে চিরবিরহেরই সাধনা॥
ওর বাঁশিতে করুণ কী সুর লাগে
বিরহমিলনমিলিত রাগে।
সুখে কি দুখে ও পাওয়া না পাওয়া,
হৃদয়বনে ও উদাসী হাওয়া,
বুঝি শুধু ও পরম কামনা॥


অমিতা। এই প্রেমের খেলার রস তো এই। তীব্র সে, মধুর সে। যখন পেয়েছি তখনো ভয় থাকে,কখন হারাই কখন হারাই। দান যখন পূর্ণ করে নিয়ে আসেন তখনো মনের মধ্যে আশঙ্কা বাজে—


কবে যে সব ফুরিয়ে দেবে, চলে যাবে দেশান্তরে॥
পথিক, তোমায় আছে জানা, করব না গো তোমায় মানা—
যাবার বেলায় যেয়ো যেয়ো বিজয়মালা মাথায় প’রে।
তবু তুমি আছ যতক্ষণ
অসীম হয়ে ওঠে হিয়ায় তোমারি মিলন।
যখন যাবে তখন প্রাণে      বিরহ মোর ভরবে গানে—
দূরের কথা সুরে বাজে সকল বেলা ব্যথায় ভরে।