প্রকৃতির প্রতিশোধ
তৃষ্ণার সলিলরাশি যায় বাষ্প হয়ে।
প্রতিজ্ঞা করিনু শেষে যন্ত্রণায় জ্বলি
এক দিন— এক দিন নেব প্রতিশোধ।
সেই দিন হতে পশি গুহার মাঝারে
সাধিয়াছি মহা হত্যা আঁধারে বসিয়া।
আজ সে প্রতিজ্ঞা মোর হয়েছে সফল।
বধ করিয়াছি তোর স্নেহের সন্তানে,
বিশ্ব ভস্ম হয়ে গেছে জ্ঞানচিতানলে।
সেই ভস্মমুষ্টি আজ মাখিয়া শরীরে
গুহার আঁধার হতে হইব বাহির।
তোরি রঙ্গভূমিমাঝে বেড়াব গাহিয়া
অপার আনন্দময় প্রতিশোধ-গান।
দেখাব হৃদয় খুলে, কহিব তোমারে,
এই দেখ্‌ তোর রাজ্য মরুভূমি আজি,
তোর যারা দাস ছিল স্নেহ প্রেম দয়া
শ্মশানে পড়িয়া আছে তাদের কঙ্কাল,
প্রলয়ের রাজধানী বসেছে হেথায়।


দ্বিতীয় দৃশ্য
রাজপথ
সন্ন্যাসী
এ কী ক্ষুদ্র ধরা! এ কী বদ্ধ চারি দিকে!
কাছাকাছি ঘেঁষাঘেঁষি গাছপালা গৃহ
চারি দিক হতে যেন আসিছে ঘেরিয়া,
গায়ের উপরে যেন চাপিয়া পড়িবে!
চরণ ফেলিতে যেন হতেছে সংকোচ,
মনে হয় পদে পদে রহিয়াছে বাধা।
এই কি নগর! এই মহা রাজধানী!
চারি দিকে ছোটো ছোটো গৃহগুহাগুলি,
আনাগোনা করিতেছে নরপিপীলিকা।