প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
তবু যদি শ্রোতার কৌতূহল না মেটে তা হলে সে করুণ মুখ করে বলতে থাকে যে, মেডিক্যাল কলেজের সার্জন - জেনেরাল হাতের আস্তিন গুটিয়ে বসে ছিল ; তার ভীষণ জেদ, মাথার ঐ জায়গাটাতে ইস্ক্রুপ দিয়ে ফুটো করে সেইখানে রবারের ছিপি এঁটে গালা লাগিয়ে শিলমোহর করে দেবে, ইহকাল - পরকালে ওখান দিয়ে আর টিকি গজাতে পারবে না। চিকিৎসাটা ইহকাল ডিঙিয়ে পরকালেই গিয়ে ঠেকবে, এই আশঙ্কায় ও কোনোমতেই রাজি হল না।
আমাদের এই ‘সে’ পদার্থটি ক্ষণজন্মা বটে; এমনতরো কোটিকে গোটিক মেলে মিথ্যে কথা বানাতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিভা। আমার আজগবি গল্পের এত বড়ো উত্তরসাধক ওস্তাদ বহু ভাগ্যে জুটেছে। গল্প-প্রশ্নের উত্তরপাড়ার এই যে মানুষ, মাঝে মাঝে একে পুপুদিদির কাছে এনে হাজির করি— দেখে তার বড়ো চোখ আরো বড়ো হয়ে ওঠে। খুশি হয়ে বাজার থেকে গরম জিলিপি এনে খাইয়ে দেয়।— লোকটা অসম্ভব জিলিপি ভালোবাসে, আর ভালোবাসে শিকদারপাড়া গলির চম্চম্। পুপুদিদি জিগেস করে, তোমার বাড়ি কোথায়। ও বলে, কোন্নগরে, প্রশ্নচিহ্নের গলিতে।
নাম বলি নে কেন। নাম বললে ইনি যে কেবলমাত্র ইনিতেই এসে ঠেকবেন, এই ভয়। জগতে আমি আছি একজন মাত্র, তুমিও তাই, সেই তুমি আমি ছাড়া আর-সকলেই তো সে। আমার গল্পের সকল সে’র উনি জামিন।
একটা কথা বলে রাখি, নইলে অধর্ম হবে। ওকে মাঝে রেখে যে পালা জমানো হয়েছে তার থেকে যারা বিচার করে তারা ভুল করে; যারা তাকে চাক্ষুষ দেখেছে তারা জানে লোকটা সুপুরুষ, চেহারা সুগম্ভীর। রাত্তিরে যেমন তারার আলোর ছড়াছড়ি, ওর গাম্ভীর্য তেমনি চাপা হাসিতে ভরা। ও পয়লা নম্বরের মানুষ তাই কোনো ঠাট্টা-মস্করায় ওকে জখম করতে পারে না। ওকে বোকার মতো সাজাতে আমার মজা লাগে, কেননা ও আমার চেয়ে বুদ্ধিমান। অবুঝের ভান করলেও ওর মানহানি হয় না; সুবিধে হয়, পুপুর স্বভাবের সঙ্গে ওর মিল হয়ে যায়।
এর মধ্যে পুপেদিদি গেছে দার্জিলিঙে। সে রইল মাথাঘষা গলিতে একলা আমার জিম্মায়। তার ভালো লাগছে না। আমিও জ্বালাতন হয়েছি। বলে, আমাকে দার্জিলিং পাঠাও।
আমি বললুম, কেন।
সে বললে, পুরুষমানুষ বেকার বসে আছি, আত্মীয়স্বজন ভারি নিন্দে করছে।
কী কাজ করবে, বলো।
পুপোদিদির খেলার রান্নার জন্যে খবরের কাগজ কুচিকুচি করে দেব।
এত মেহন্নত সইবে না। একটু চুপ করো দেখি। আমি এখন হুঁহাউ দ্বীপের ইতিহাস লিখছি।
হুঁহাউ নামটা শোনাচ্ছে ভালো, দাদা। ওটা তোমার চেয়ে আমার কলমেই মানাত ঠিক। বিষয়টার একটু আমেজ দিতে পার কি।
ঠাট্টা নয়, বিষয়টা গম্ভীর, কলেজে পাঠ্য হবার আশা রাখি। একদল বৈজ্ঞানিক ঐ শূন্য দ্বীপে বসতি বেঁধেছেন। খুব কঠিন