প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
কেদার। আহা, রাগ করবেন না বৈকুণ্ঠবাবু—
অবিনাশ। দাদা, মিথ্যা রাগ করছ কেন। কেদারের আবার অপমান কিসের?
বৈকুণ্ঠ। আবার! তোর সঙ্গে আর আমি কথা কব না।
অবিনাশ। মাপ করো দাদা! (বৈকুণ্ঠ নিরুত্তর)—মাপ করো, আমার অপরাধ হয়েছে! (নিরুত্তর)—দাদা, রাগ করে থেকো না—
বৈকুণ্ঠ। তবে শোন্। কেদারবাবুর একটি বিবাহযোগ্যা পরমা সুন্দরী বয়ঃপ্রাপ্ত শ্যালী আছে, তোরও তো বিবাহযোগ্য বয়স হয়েছে—এখন—
কেদার। যোগ্যং যোগ্যেন যোজয়েৎ।
বৈকুণ্ঠ। ঠিক বলেছেন, আমার মনের কথাটি বলেছেন।
কেদার। আমারও ঠিক ঐ মনের কথা।
অবিনাশ। কিন্তু দাদা, আমার মনের কথা একটু স্বতন্ত্র। আমার বিবাহ করবার ইচ্ছে নেই।
কেদার। অবিনাশ, তুমি হাসালে। বিবাহ করবার পূর্বেই অনিচ্ছে! ওর নাম কী, করবার পরে যদি হত তো মানে পাওয়া যেত।
বৈকুণ্ঠ। মেয়েটি তো সুন্দরী—
অবিনাশ। তাকে দেখেছ না কি?
বৈকুন্ঠ। দেখতে হবে কেন? কেদারবাবু যে বলছেন।
কেদার। বিশ্বাস হল না? কী বলে, আমার আকৃতি দেখেই ভয় পেলে—কিন্তু ওর নাম কী, সে যে আমার শ্যালী, আমার স্ত্রীর সহোদরা, আমার বংশের কেউ নয়। একবার স্বচক্ষে দেখে এলে হয় না?
বৈকুণ্ঠ। সে তো বেশ কথা, দেখে এসো-না অবিনাশ।
অবিনাশ। দেখে আর করব কী! ঘরের মধ্যে বাইরের লোক আনতে চাই নে—
কেদার। তা এনো না। কিন্তু ওর নাম কী, বাইরের লোকের পানে একবার তাকাতে দোষ কী—কী বলে, একবার দেখে এলে ঘরেরও ক্ষতি নেই, ওর নাম কী, বাইরেরও বিশেষ ক্ষয় হবে না।
অবিনাশ। আচ্ছা, তাই হবে। এখন খেতে যাও দাদা, নীরু আমাকে পাঠিয়ে দিল।
বৈকুণ্ঠ। এই যে কেদারবাবু এখনো—আগে ওঁর—
কেদার। বিলক্ষণ!
অবিনাশ। তা, খাবার না বলে দিলে খাবার আসবে কোথা থেকে! ঈশেনকে একবার ডাকা যাক।
কেদার। ঈশেনকে ডেকো না ভাই, ওর নাম কী, তার সঙ্গে পূর্বেই দুটো-একটা কথাবার্তা হয়ে গেছে।
তিনকড়ি। এই নাও—বসে যাও—আমি পরিবেশন করছি।