শৈশবসঙ্গীত
    “প্রতাপ তাহার নাম!
এখনি এখনি ওই ছুরি তব
    বসাইয়া দেও বুকে,
যে জ্বালা হেথায় জ্বলিছে-কেমনে
    কব তাহা এক মুখে?
নিভাও সে জ্বালা, নিভাও সে জ্বালা
    দাও তার প্রতিফল—
মৃত্যু ছাড়া এই হৃদি-অনলের
    নাই আর কোন জল!”
কাঁদিয়া উঠিল মালতী কহিল
    পিতার চরণ ধ’রে,
“ও কথা ব’লো না— ব’লো না গো পিতা,
    যেও না ছাড়িয়ে মোরে!
কুমার— কুমার— শুন মোর কথা
    এক ভিক্ষা শুধু মাগি—
রাখ মোর কথা, ক্ষম গো পিতারে,
    দুখিনী আমার লাগি!—
শোণিত নহিলে ও ছুরির তব
    পিপাসা না মিটে যদি,
তবে এই বুকে দেহ গো বিঁধিয়া
    এই পেতে দিনু হৃদি!”
আকাশের পানে চাহিয়া কুমার
    কহিল কাতর স্বরে,
“ক্ষমা কর পিতা, পারিব না আমি,
    কহিতেছি সকাতরে!
অতি নিদারুণ অনুতাপশিখা
    দহিছে যে হৃদিতল,
সে হৃদয়মাঝে ছুরিকা বসায়ে
    বল গো কি হবে ফল?
অনুতাপী জনে ক্ষমা কর পিতা!