শৈশবসঙ্গীত

ধরণীর মুখ হ’তে আঁধার মুছায়ে,

বিমল শিশিরজলে ধুইয়া চরণ,

নিবিড় কুন্তলে মাখি কনককিরণ,

সোনার মেঘের মত আকাশের তলে,

কনককমলসম মানসের জলে

ভাসিতে লাগিল যত দিক্‌-বালাগণে—

উলসিত তনুখানি প্রভাতপবনে।

ওই হিমগিরি-’পরে কোন দিক্‌বালা

রঞ্জিছে কনককরে নীহারিকামালা!

নিভৃতে সরসীজলে করিতেছে স্নান,

ভাসিছে কমলবনে কমলবয়ান।

তীরে উঠি মালা গাঁথি শিশিরের জলে

পরিছে তুষারশুভ্র সুকুমার গলে।

ওদিকে দেখেছ ওই সাহারা-প্রান্তরে,

মধ্যে দিক্‌দেবী শুভ্র বালুকার ‘পরে।

অঙ্গ হতে ছুটিতেছে জ্বলন্ত কিরণ,

চাহিতে মুখের পানে ঝলসে নয়ন।

আঁকিছে বালুকাপুঞ্জে শত শত রবি,

আঁকিছে দিগন্তপটে মরীচিকা-ছবি।

অন্য দিকে কাশ্মীরের উপত্যকা-তলে

পরি শত বরণের ফুলমালা গলে,

শত বিহঙ্গের গান শুনিতে শুনিতে,

সরসীলহরীমালা গুনিতে গুনিতে,

এলায়ে কোমল তনু কমলকাননে

আলসে দিকের বালা মগন স্বপনে।

ওই হোথা দিক্‌দেবী বসিয়া হরষে

ঘুরায় ঋতুর চক্র মৃদুল পরশে।

ফুরায়ে গিয়েছে এবে শীতসমীরণ,

বসন্ত পৃথিবীতলে অর্পিবে চরণ।

পাখীরে গাহিতে কহি অরণ্যের গান