বন-ফুল
দেখি ত দেখিই বোসে সলিল-উচ্ছ্বাসে!
তেমন জীবন্ত ভাব নাই ত অন্তরে—
দেখিয়া লতার কোলে    ফুটন্ত কুসুম দোলে,
কুঁড়ি লুকাইয়া আছে পাতার ভিতবে—

নির্ঝরের ঝরঝরে    হৃদয়ে তেমন কোরে
উল্লাসে শোণিতরাশি উঠে না নাচিয়া!
কি জানি কি করিতেছি,    কি জানি কি ভাবিতেছি,
কি জানি কেমনধারা শূন্যপ্রায় হিয়া!

তবুও যাহাতে হোক্‌    নিবাতে হইবে শোক,
তবুও মুছিতে হবে নয়নের জল।
তবুও ত আপনারে    ভুলিতে হইবে হা রে,
তবুও নিবাতে হবে হৃদয়-অনল!

কাননে পশিগে তবে    শুক যেথা সুধারবে
গান করে জাগাইয়া নীরব কানন।
উঁচু করি করি মাথা    হরিণেরা বৃক্ষপাতা
সুধীরে নিঃশঙ্কমনে করিছে চর্ব্বণ!’

সুন্দরী এতেক বলি    পশিল কাননস্থলী,
পাদপ রৌদ্রের তাপ করিছে বারণ।
বৃক্ষছায়ে তলে তলে    ধীরে ধীরে নদী চলে
সলিলে বৃক্ষের মূল করি প্রক্ষালন।

হরিণ নিঃশঙ্কমনে    শুয়ে ছিল ছায়াবনে,
পদশব্দ পেয়ে তারা চমকিয়া উঠে।
বিস্তারি নয়নদ্বয়    মুখপানে চাহি রয়,
সহসা সভয় প্রাণে বনান্তরে ছুটে।

ছুটিছে হরিণচয়,    কমলা অবাক্‌ রয়—