বন-ফুল
সেদিন আসিবে আর    হৃদিমাঝে যাতনার
রেখা নাই, প্রমোদেই পূরিত অন্তর!
ছুটাছুটি করি বনে    বেড়াইব ফুল্লমনে,
প্রভাতে অরুণোদয়ে উঠিব শিখর!

মালা গাঁথি ফুলে ফুলে    জড়াইব এলোচুলে,
জড়ায়ে ধরিব গিয়ে হরিণের গল!
বড় বড় দুটি আঁখি    মোর মুখপানে রাখি
এক দৃষ্টে চেয়ে রবে হরিণ বিহ্বল!

সেদিন গিয়েছে হা রে—    বেড়াই নদীর ধারে
ছায়াকুঞ্জে শুনি গিয়ে শুকদের গান!
না থাক্‌, হেথায় বসি,    কি হবে কাননে পশি—
শুক আর গাবে নাকো খুলিয়ে পরাণ!
সেও যে গো ধরিয়াছে বিষাদের তান!

জুড়ায়ে হৃদয়ব্যথা    দুলিবে না পুষ্পলতা,
তেমন জীবন্ত ভাবে বহিবে না বায়!
প্রাণহীন যেন সবি—    যেন রে নীরব ছবি—
প্রাণ হারাইয়া যেন নদী বহে যায়!

তবুও যাহাতে হোক্‌    নিবাতে হইবে শোক,
তবুও মুছিতে হবে নয়নের জল!
তবুও ত আপনারে    ভুলিতে হইবে হা রে!
তবুও নিবাতে হবে হৃদয়-অনল!

যাই তবে বনে বনে    ভ্রমিগে আপনমনে,
যাই তবে গাছে গাছে    ঢালি দিই জল!
শুকপাখীদের গান    শুনিয়া জুড়াই প্রাণ,
সরসী হইতে তবে তুলিগে কমল!

হৃদয় নাচে না ত গো তেমন উল্লাসে!
ভ্রমিত ভ্রমিই বনে    ম্রিয়মাণ শূন্যমনে,