বন-ফুল
     এসেছিলি যেথা হোতে সেই সে কুটীরে!
আবার ফুলের গাছে ঢালিবি লো জল!
     আবার ছুটিবি গিয়ে পর্ব্বতের শিরে!

পৃথিবীর যাহা কিছু ভুলে যা লো সব,
     নিরাশযন্ত্রণাময় পৃথ্বীর প্রণয়!
নিদারুণ সংসারে ঘোর কলরব,
     নিদারুণ সংসারের জ্বালা বিষ্ময়।

তুই স্বরগের পাখী পৃথিবীতে কেন!
     সংসারকণ্টকবনে পারিজাত ফুল!
নন্দনের বনে গিয়া    গাইবি খুলিয়া হিয়া,
     নন্দনমলয়বায়ু করিবি আকুল।

আয় তবে ফিরে যাই বিজন শিখরে—
     নির্ঝর ঢালিছে যেথা স্ফটিকের জল,
তটিনী বহিছে যথা কলকলস্বরে,
     সুবাস নিশ্বাস ফেলে বনফুলদল!

বন-ফুল ফুটেছিলি ছায়াময় বনে,
     শুকাইলি মানবের নিশ্বাসের বায়ে!
দয়াবয়ী বনদেবী শিশিরসেচনে
     আবার জীবন তোরে দিবেন ফিরায়ে।

এখনো কমলা ওই রয়েছে দাঁড়িয়ে
     জ্বলন্ত চিতার পরে মেলিয়ে নয়ন!
ওই রে সহসা ওই মূর্চ্ছিয়ে পড়িয়ে
     ভসেমর শয্যার পরে করিল শয়ন!

এলায়ে পড়িল ভসেম সুনিবিড় কেশ!
     অঞ্চলবসন ভসেম পড়িল এলায়ে!
উড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে আলুথালু বেশ
     কমলার বক্ষ হোতে, শ্মশানের বায়ে!