বন-ফুল
নীরদের চিতা? নীরদের দেহ অগ্নিমাঝে জ্বলে?
নিবায়ে ফেলিবে অগ্নি, কমলে, কি নয়নের জলে?

নীরব নিস্তব্ধ ভাবে কমলা দাঁড়ায়ে!
     গভীর নিশ্বাসবায়ু উচ্ছ্বাসিয়া উঠে!
ধূমময় নিশীথের শ্মশানের বায়ে
     এলোথেলো কেশরাশি চারি দিকে ছুটে!

ভেদি অমা নিশীথের গাঢ় অন্ধকার
     চিতার অনলোত্থিত অস্ফুট আলোক
পড়িয়াছে ঘোর মলান মুখে কমলার,
     পরিস্ফুট করিতেছে সুগভীর শোক!

নিশীথে শ্মশানে আর নাই জন প্রাণী,
     মেঘান্ধ অমান্ধকারে মগ্ন চরাচর!
বিশাল শ্মশানক্ষেত্রে শুধু একাকিনী
     বিষাদপ্রতিমা বামা বিলীন-অন্তর!

তটিনী চলিয়া যায় কাঁদিয়া কাঁদিয়া!
     নিশীথশ্মশানবায়ু স্বনিছে উচ্ছ্বাসে!
আলেয়া ছুটিছে হোথা আঁধার ভেদিয়া!
     অস্থির বিকট শব্দ নিশার নিশ্বাসে!

শৃগাল চলিয়া গেল সমুচ্চে কাঁদিয়া
     নীরব শ্মশানময় তুলি প্রতিধ্বনি!
মাথার উপর দিয়া পাখা ঝাপটিয়া
     বাদুড় চলিয়া গেল করি ঘোরধ্বনি!

এ-হেন ভীষণ স্থানে দাঁড়ায়ে কমলা!
     কাঁপে নাই কমলার একটিও কেশ!
শূন্যনেত্রে শূন্যহৃদে চাহি আছে বালা
     চিতার অনলে করি নয়ননিবেশ!