প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
বাদল করেছে মেঘের রং ঘন নীল। ঢং ঢং ক’রে ৯টা বাজল। বংশু ছাতা মাথায় কোথায় যাবে? ও যাবে সংসারবাবুর বাসায়। সেখানে কংসবধের অভিনয় হবে। আজ মহারাজ হংসরাজসিংহ আসবেন। কংসবধ অভিনয় তাঁকে দেখাবে। বাংলাদেশে তাঁর বাড়ি নয়। তিনি পাংশুপুরের রাজা। সংসারবাবু তাঁরি সংসারে কাজ করেন। কাংলা,তুই বুঝি সংসারবাবুর বাসায় চলেছিস? সেখানে কংসবধে সং সাজতে হবে। কাংলা, তোর ঝুড়িতে কী? ঝুড়িতে আছে পালং শাক, পিড়িং শাক, ট্যাংরা মাছ, চিংড়ি মাছ। সংসারবাবুর মা চেয়েছেন।
আজ আদ্যনাথবাবুর কন্যার বিয়ে— তাঁর এই শল্যপুরের বাড়িতে। কন্যার নাম শ্যামা। বরের নাম বৈদ্যনাথ। বরের বাড়ি অহল্যাপাড়ায়। তিনি আর তাঁর ভাই সৌম্য পাটের ব্যবসা করেন। তাঁর এক ভাই ধৌম্যনাথ কলেজে পড়ে, আর রম্যনাথ ইস্কুলে। আদ্যনাথ বড়ো ভালো লোক। দান-ধ্যান পুণ্যকাজে তাঁর মন। দেশের জন্য অনেক কাজ করেন। সবাই বলে,তিনি ধন্য। আদ্যনাথবাবু তাঁর ভৃত্য সত্যকে আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন। আমি বলেছি তাঁর কন্যার বিবাহে অবশ্য অবশ্য যাব। এখানে এসে দেখি, আঙিনায় বাদ্য বাজছে। চাষীরা এ বৎসর ভালো শস্য পেয়েছে। তাই তারা ভিড় ক’রে এসেছে। ভিতরে ঢুকি— সাধ্য কী! অগত্যা বাইরে ব’সে আছি। দেখছি, ছেলেরা খুশী হয়ে নৃত্য করচে। কেউ বা ব্যাটবল খেলছে। নিত্যশরণ ওদের ক্যাপ্টেন।
কুমোর-পাড়ার গোরুর গাড়ি —
বোঝাই-করা কল্সি হাঁড়ি।
গাড়ি চালায় বংশীবদন,
সঙ্গে-যে যায় ভাগ্নে মদন।
হাট বসেচে শুক্রবারে
বক্সীগঞ্জে পদ্মাপারে।
জিনিষপত্র জুটিয়ে এনে
গ্রামের মানুষ বেচে কেনে।
উচ্ছে বেগুন পটল মূলো,
বেতের বোনা ধামা কুলো,
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা,
শীতের র্যাপার নক্শাকাটা।