পূরবী

    যে তপস্যা সত্য তারে কেহ বাধা দিবে না ত্রিদিবে

                  নিশ্চয় সে জানি।

 

    হে রাজতপস্বী বীর, তোমার সে উদার ভাবনা

                  বিধির ভাণ্ডারে

    সঞ্চিত হইয়া গেছে, কাল কভু তার এক কণা

                  পারে হরিবারে?

    তোমার সে প্রাণোৎসর্গ, স্বদেশলক্ষ্মীর পূজাঘরে

                  সে সত্যসাধন,

    কে জানিত, হয়ে গেছে চিরযুগযুগান্তর-তরে

                  ভারতের ধন।

 

    অখ্যাত অজ্ঞাত রহি দীর্ঘকাল, হে রাজবৈরাগী,

                  গিরিদরীতলে

    বর্ষার নির্ঝর যথা শৈল বিদারিয়া উঠে জাগি

                  পরিপূর্ণ বলে,

    সেইমতো বাহিরিলে — বিশ্বলোক ভাবিল বিস্ময়ে,

                  যাহার পতাকা

    অম্বর আচ্ছন্ন করে, এতকাল এত ক্ষুদ্র হয়ে

                  কোথা ছিল ঢাকা।

 

    সেইমতো ভাবিতেছি আমি কবি এ পূর্ব-ভারতে,

                  কী অপূর্ব হেরি,

    বঙ্গের অঙ্গনদ্বারে কেমনে ধ্বনিল কোথা হতে

                  তব জয়ভেরী।

    তিন শত বৎসরের গাঢ়তম তমিস্রা বিদারি

                  প্রতাপ তোমার

    এ প্রাচীদিগন্তে আজি নবতর কী রশ্মি প্রসারি

                   উদিল আবার।

 

    মরে না, মরে না কভু সত্য যাহা শত শতাব্দীর

                  বিস্মৃতির তলে —