পূরবী

                   দিল্লিরাজশালা —

     একে একে কক্ষে কক্ষে অন্ধকারে লাগিল মিশিতে

                  দীপালোকমালা।

     শবলুব্ধ গৃধ্রদের ঊর্ধ্বস্বর বীভৎস চীৎকারে

                  মোগলমহিমা

     রচিল শ্মশানশয্যা — মুষ্টিমেয় ভস্মরেখাকারে

                  হল তার সীমা।

 

      সেদিন এ বঙ্গপ্রান্তে পণ্যবিপণীর এক ধারে

                  নিঃশব্দচরণ

     আনিল বণিকলক্ষ্মী সুরঙ্গপথের অন্ধকারে

                  রাজসিংহাসন।

     বঙ্গ তারে আপনার গঙ্গোদকে অভিষিক্ত করি

                  নিল চুপে চুপে —

     বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল পোহালে শর্বরী

                  রাজদণ্ডরূপে।

 

     সেদিন কোথায় তুমি হে ভাবুক, হে বীর মারাঠি,

                  কোথা তব নাম!

     গৈরিক পতাকা তব কোথায় ধুলায় হল মাটি —

                  তুচ্ছ পরিণাম!

     বিদেশীর ইতিবৃত্ত দস্যু বলি করে পরিহাস

                  অট্টহাস্যরবে —

     তব পুণ্য চেষ্টা যত তস্করের নিষ্ফল প্রয়াস,

                  এই জানে সবে।

 

    অয়ি ইতিবৃত্তকথা, ক্ষান্ত করো মুখর ভাষণ।

                  ওগো মিথ্যাময়ী,

    তোমার লিখন- ' পরে বিধাতার অব্যর্থ লিখন

                  হবে আজি জয়ী।

    যাহা মরিবার নহে তাহারে কেমনে চাপা দিবে

                  তব ব্যঙ্গবাণী?