শ্যামলী

সেদিন ঢেউ ছিল না জলে।

    আশ্বিনের রোদ্‌দুর কাঁপছে

           সমুদ্রের শিহর - লাগা নীলিমায়।

                   বাসার ধারে পুরোনো ঝাউগাছে

             ধেয়ে আসছে খাপছাড়া হাওয়া,

                       ঝর্‌ঝর্‌ করে উঠছে তার পাতা।

      বেগনি রঙের পাখি, বুকের কাছে সাদা,

            টেলিগ্রাফের তারে বসে লেজ দুলিয়ে

                     ডাকছে মিষ্টি মৃদু চাপা সুরে।

      শরৎ - আকাশের নির্মল নীলে ছড়িয়ে আছে

          কোন্‌ অনাদি নির্বাসনের গভীর বিষাদ।

            মনের মধ্যে হুহু করে উঠছে—

                         “ ফিরে যেতে হবে। ”

            থেকে থেকে মনে পড়ছে,

      সেদিনকার সেই জল - মুছে - ফেলা চোখে

                 ঝলে উঠেছিল যে আলো।

 

সেইদিনই চড়লুম জাহাজে।

          বন্দরে নেমেই এসেছি চলে।

            রাস্তার বাঁকে এসে চাইলেম বাড়ির দিকে ;

                    মনে হল, সেখানে বাস নেই কারও।

                       এলেম সদর দরজার সামনে,

                                দেখি তালা বন্ধ।

                       ধক্‌ করে উঠল বুকের মধ্যে ;

            বাড়ির ভিতর থেকে শূন্যতার দীর্ঘনিশ্বাস এসে

                       লাগল আমার অন্তরে।

 

                       অনেক সন্ধানের পর

                           দেখা হল শেষে।

                    কোন্‌ বারো - ভুঁইঞাদের আমলের

            একখানা তিন - কাল - পেরোনো গ্রাম -—

                 একটি পুরোনো দিঘির ধারে—