অনাগতা

এসেছিল বহু আগে যারা মোর দ্বারে,

                    যারা চলে গেছে একেবারে,

ফাগুন-মধ্যাহ্নবেলা শিরীষছায়ায় চুপে চুপে

                    তারা ছায়ারূপে

     আসে যায় হিল্লোলিত শ্যাম দুর্বাদলে।

                ঘন কালো দিঘিজলে

     পিছনে-ফিরিয়া-চাওয়া আঁখি জ্বলো জ্বলো

                    করে ছলোছলো।

             মরণের অমরতালোকে

ধূসর আঁচল মেলি ফিরে তারা গেরুয়া আলোকে।

 

যে এখনো আসে নাই মোর পথে,

     কখনো যে আসিবে না আমার জগতে,

           তার ছবি আঁকিয়াছি মনে —

              একেলা সে বাতায়নে

           বিদেশিনী জন্মকাল হতে।

     সে যেন শেঁউলি ভাসে ক্ষীণ মৃদু স্রোতে,

                কোথায় তাহার দেশ

                    নাই সে উদ্দেশ।

 

         চেয়ে আছে দূর-পানে

     কার লাগি আপনি সে নাহি জানে।

          সেই দূরে ছায়ারূপে রয়েছে সে

                বিশ্বের সকল-শেষে

          যে আসিতে পারিত তবুও

                    এল না কভুও।

         জীবনের মরীচিকাদেশে

                  মরুকন্যাটির আঁখি ফিরে ভেসে ভেসে।