যুগল

            আমি থাকি একা,

এই বাতায়নে বসে এক বৃন্তে যুগলকে দেখা —

                সেই মোর সার্থকতা।

             বুঝিতে পারি সে কথা

         লোকে লোকে কী আগ্রহ অহরহ

                করিছে সন্ধান

আপনার বাহিরেতে কোথা হবে আপনার দান।

    তা নিয়ে বিপুল দুঃখে বিশ্বচিত্ত জেগে উঠে,

             তারি সুখে পূর্ণ হয়ে ফুটে

                   যা-কিছু মধুর।

                যত বাণী, যত সুর,

         যত রূপ, তপস্যার যত বহ্নিলিখা,

                        সৃষ্টিচিত্তশিখা,

                 আকাশে আকাশে লিখে

                      দিকে দিকে

         অণুপরমাণুদের মিলনের ছবি।

                      গ্রহ তারা রবি

   যে-আগুন জ্বেলেছে তা বাসনারই দাহ,

          সেই তাপে জগৎপ্রবাহ

চঞ্চলিয়া চলিয়াছে বিরহমিলনদ্বন্দ্বঘাতে।

                দিনরাতে

        কালের অতীত পার হতে,

অনাদি আহ্বানধ্বনি ফিরিতেছে ছায়াতে আলোতে।

                 সেই ডাক শুনে

     কত সাজে সাজিয়েছে আজি এ-ফাল্গুনে

            বনে বনে অভিসারিকার দল,

               পত্রে পুষ্পে হয়েছে চঞ্চল —

সমস্ত বিশ্বের মর্মে যে-চাঞ্চল্য তারায় তারায়

              তরঙ্গিছে প্রকাশধারায়,

     নিখিল ভুবনে নিত্য যে-সংগীত বাজে

               মূর্তি নিল বনচ্ছায়ে যুগলের সাজে।