বীথিকা

‘ রাতের পথে পথিক তুমি, প্রদীপ তব জ্বালো

            প্রাণের শেষ শিখা। '

কাহার মুখে তাকাব আমি, আলোক কার ঘরে

            রয়েছে মোর তরে —

সঙ্গে যাবে যে আলোখানি পারের ঘাট - পানে,

এ ধরণীর বিদায় - বাণী কহিবে কানে কানে,

            মম ছায়ার সাথে

      আলাপ যার হবে নিভৃত রাতে।

ভাসিবে যবে খেয়ার তরী কেহ কি উপকূলে

      রচিবে ডালি নাগকেশর ফুলে,

তুলিয়া আনি চৈত্রশেষে কুঞ্জবন হতে

            ভাসায়ে দিবে স্রোতে?

 

আমার বাঁশি করিবে সারা যা ছিল গান তার,

            সে নীরবতা পূর্ণ হবে কিসে?

তারার মতো সুদূরে - যাওয়া দৃষ্টিখানি কার

            মিলিবে মোর নয়ন - অনিমিষে?

অনেক - কিছু হয়েছে জমা, অনেক হল খোঁজা,

            আশাতৃষার বোঝা

                      ধুলায় যাব ফেলে।

ধুলার দাবি নাইকো যাহে সে ধন যদি মেলে,

        সুখদুখের সব - শেষের কথা,

প্রাণের মণিখনির যেথা গোপন গভীরতা

      সেথায় যদি চরম দান থাকে,

            কে এনে দেবে তাকে?

যা পেয়েছিনু অসীম এই ভবে

      ফেলিয়া যেতে হবে —

আকাশ - ভরা রঙের লীলাখেলা,

       বাতাস - ভরা সুর,

পৃথিবী - ভরা কত না রূপ, কত রসের মেলা,

      হৃদয় - ভরা স্বপন - মায়াপুর,

      মূল্য শোধ করিতে পারে তার