বিচিত্রিতা

            দুর্বল মোহ কোন আয়োজন করে

            যেথা অরাজক হিয়া লজ্জায় মরে —

            ওই ডাকে, রাজা, এসো এ শূন্য ঘরে

                             হৃদয়সিংহাসনে।

 

চেয়ে আছে নারী, প্রদীপ হয়েছে জ্বালা —

বিফল কোরো না বীরের বরণডালা।

            মিলনলগ্ন বারে বারে ফিরে যায়

            বরসজ্জার ব্যর্থতাবেদনায়,

            মনে মনে সদা ব্যথিত কল্পনায়

                             তোমারে পরায় মালা।

 

তব রথ তারা স্বপ্নে দেখিছে জেগে,

ছুটিছে অশ্ব বিদ্যুৎকশা লেগে।

            ঘুরিছে চক্র বহ্নিবরন সে যে,

            উঠিছে শূন্যে ঘর্ঘর তার বেজে,

            প্রোজ্জ্বল চূড়া প্রভাতসূর্যতেজে,

                             ধ্বজা রঞ্জিত রাঙা সন্ধ্যার মেঘে।

 

উদ্দেশহীন দুর্গম কোন্‌খানে

চল দুঃসহ দুঃসাহসের টানে।

            দিল আহ্বান আলসনিদ্রা-নাশা

            উদয়কূলের শৈলমূলের বাসা,

            অমরালোকের নব আলোকের ভাষা

                             দীপ্ত হয়েছে দৃপ্ত তোমার প্রাণে।

 

অদূরে সুনীল সাগরে ঊর্মিরাশি

উত্তালবেগে উঠিছে সমুচ্ছ্বাসি।

             পথিক ঝটিকা রুদ্রের অভিসারে

            উধাও ছুটিছে সীমাসমুদ্রপারে,

            উল্লোল কলগর্জিত পারাবারে

                             ফেনগর্গরে ধ্বনিছে অট্টহাসি।