বিদায়-অভিশাপ
দেবগণকর্তৃক আদিষ্ট হইয়া বৃহস্পতিপুত্র কচ দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের নিকট হইতে সঞ্জীবনী বিদ্যা শিখিবার নিমিত্ত তৎসমীপে গমন করেন। সেখানে সহস্র বৎসর অতিবাহন করিয়া এবং নৃত্যগীতবাদ্যদ্বারা শুক্রদুহিতা দেবযানীর মনোরঞ্জনপূর্বক সিদ্ধকাম হইয়া, কচ দেবলোকে প্রত্যাগমন করেন। দেবযানীর নিকট হইতে বিদায়কালীন ব্যাপার পরে বিবৃত হইল।
কচ ও দেবযানী
কচ।
দেহ আজ্ঞা, দেবযানী, দেবলোকে দাস
করিবে প্রয়াণ। আজি গুরুগৃহবাস
সমাপ্ত আমার। আশীর্বাদ করো মোরে
যে বিদ্যা শিখিনু তাহা চিরদিন ধরে
অন্তরে জাজ্বল্য থাকে উজ্জ্বল রতন,
সুমেরুশিখরশিরে সূর্যের মতন,
অক্ষয়কিরণ।
দেবযানী।
মনোরথ পুরিয়াছে,
পেয়েছ দুর্লভবিদ্যা আচার্যের কাছে,
সহস্রবর্ষের তব দুঃসাধ্যসাধনা
সিদ্ধ আজি; আর কিছু নাহি কি কামনা
ভেবে দেখো মনে মনে।
কচ।
আর কিছু নাহি।
দেবযানী। কিছু নাই? তবু আরবার দেখো চাহি
অবগাহি হৃদয়ের সীমান্ত অবধি
করহ সন্ধান— অন্তরের প্রান্তে
যদি
কোনো বাঞ্ছা থাকে, কুশের অঙ্কুর-সম
ক্ষুদ্র দৃষ্টি-অগোচর, তবু তীক্ষ্ণতম।
কচ।
আজি পূর্ণ কৃতার্থ জীবন। কোনো ঠাঁই
মোর মাঝে কোনো দৈন্য কোনো শূন্য নাই
সুলক্ষণে।
দেবযানী।
তুমি সুখী ত্রিজগৎ-মাঝে।
যাও তবে ইন্দ্রলোকে আপনার কাজে
উচ্চশিরে গৌরব বহিয়া। স্বর্গপুরে