পত্রপুট

                            অনুচ্চ তটচ্ছায়ায়।

         অনাবৃষ্টির কার্পণ্যে কখনো সে হয়েছে ক্ষীণ,

                     আষাঢ়ের দাক্ষিণ্যে কখনো সে হয়েছে প্রগল্‌ভ।

         তুচ্ছতার আবরণে অনুজ্জ্বল

                   অতি সাধারণ স্ত্রী-স্বরূপকে

         কখনো করেছে লালন, কখনো করেছে পরিহাস,

                            আঘাত করেছে কখনো বা।

 

আমার ভালোবাসার আর-একটা ধারা

   মহাসমুদ্রের-বিরাট-ইঙ্গিত-বাহিনী।

           মহীয়সী নারী স্নান করে উঠেছে

                             তারই অতল থেকে।

          সে এসেছে অপরিসীম ধ্যানরূপে

                              আমার সর্ব দেহে মনে —

              পূর্ণতর করেছে আমাকে, আমার বাণীকে।

জ্বেলে রেখেছে আমার চেতনার নিভৃত গভীরে

               চিরবিরহের প্রদীপশিখা।

সেই আলোকে দেখেছি তাকে অসীম শ্রীলোকে,

দেখেছি তাকে বসন্তের পুষ্পপল্লবের প্লাবনে,

সিসুগাছের কাঁপন-লাগা পাতাগুলির থেকে

               ঠিকরে পড়েছে যে রৌদ্রকণা

তার মধ্যে শুনেছি তার সেতারের দ্রুতঝংকৃত সুর।

        দেখেছি ঋতুরঙ্গভূমিতে

                নানা রঙের ওড়না-বদল-করা তার নাচ

                                 ছায়ায় আলোয়।

 

ইতিহাসের সৃষ্টি-আসনে

        ওকে দেখেছি বিধাতার বামপাশে ;

                দেখেছি সুন্দর যখন অবমানিত

                               কদর্য-কঠোরের অশুচিস্পর্শে

               তখন সেই রুদ্রাণীর তৃতীয় নেত্র থেকে

                               বিচ্ছুরিত হয়েছে প্রলয়-অগ্নি,