পত্রপুট

             মৃত্যু, ওগো মধুময় মৃত্যু,

              তুমি আমায় নিয়ে চলেছ লোকান্তরে

                             গানের পাখায়।

 

আমি ওকে দেখলেম,

   যেন নিকষবরন ঘাটে সন্ধ্যার কালো জলে

      অরুণবরন পা-দুখানি ডুবিয়ে বসে আছে অপ্সরী,

      অকূল সরোবরে সুরের ঢেউ উঠেছে মৃদুমৃদু,

          আমার বুকের কাঁপনে কাঁপন-লাগা হাওয়া

            ওকে স্পর্শ করছে ঘিরে ঘিরে।

 

আমি ওকে দেখলেম,

   যেন আলো-নেবা বাসরঘরে নববধূ,

       আসন্ন প্রত্যাশার নিবিড়তায়

              দেহের সমস্ত শিরা স্পন্দিত।

     আকাশে ধ্রুবতারার অনিমেষ দৃষ্টি,

             বাতাসে সাহানা রাগিণীর করুণা।

 

আমি ওকে দেখলেম,

       ও যেন ফিরে গিয়েছে পূর্বজন্মে

              চেনা-অচেনার অস্পষ্টতায়।

          সে যুগের পালনো বাণী ধরবে বলে

                      ঘুরিয়ে ফেলছে গানের জাল,

       সুরের ছোঁওয়া দিয়ে খুঁজে খুঁজে ফিরছে

                    হারানো পরিচয়কে।

 

সমুখে ছাদ ছাড়িয়ে উঠেছে বাদামগাছের মাথা,

         উপরে উঠল কৃষ্ণচতুর্থীর চাঁদ।

                 ডাকলেম নাম ধরে।

         তীক্ষ্মবেগে উঠে দাঁড়ালো সে,

ভ্রূকুটি করে বললে, আমার দিকে ফিরে —

            “ এ কী অন্যায়, কেন এলে লুকিয়ে। ”