ভীষণ

               বনস্পতি, তুমি যে ভীষণ

      ক্ষণে ক্ষণে আজিও তা মানে মোর মন।

      প্রকাণ্ড মাহাত্ম্যবলে জেনেছিলে ধরা একদিন

      যে আদি অরণ্যযুগে, আজি তাহা ক্ষীণ।

      মানুষের - বশ - মানা এই - যে তোমায় আজ দেখি,

                তোমার আপন রূপ এ কি?

        আমার বিধান দিয়ে বেঁধেছি তোমারে

              আমার বাসার চারি ধারে।

               ছায়া তব রেখেছি সংযমে।

          দাঁড়ায়ে রয়েছ স্তব্ধ জনতাসংগমে

               হাটের পথের ধারে।

                   নম্র পত্রভারে

                কিংকরের মতো

          আছ মোর বিলাসের অনুগত।

                     লীলাকাননের মাপে

          তোমারে করেছি খর্ব। মৃদু কলালাপে

                     কর চিত্তবিনোদন,

             এ ভাষা কি তোমার আপন?

 

              একদিন এসেছিলে আদিবনভূমে ;

                             জীবলোক মগ্ন ঘুমে—

                                  তখনো মেলে নি চোখ,

                                      দেখে নি আলোক।

               সমুদ্রের তীরে তীরে শাখায় মিলায়ে শাখা

                             ধরার কঙ্কাল দিলে ঢাকা।

               ছায়ায় বুনিয়া ছায়া স্তরে স্তরে

          সবুজ মেঘের মতো ব্যাপ্ত হলে দিকে দিগন্তরে।

        লতায় গুল্মেতে ঘন, মৃতগাছ - শুষ্কপাতা - ভরা,

                   আলোহীন পথহীন ধরা।

            অরণ্যের আর্দ্র   গন্ধে নিবিড় বাতাস