মাতা

      কুয়াশার জাল

আবরি রেখেছে প্রাতঃকাল—

    সেইমতো ছিনু আমি কতদিন

          আত্মপরিচয়হীন ।

    অস্পষ্ট স্বপ্নের মতো করেছিনু অনুভব

কুমারীচাঞ্চল্যতলে আছিল যে সঞ্চিত গৌরব,

      যে নিরুদ্ধ আলোকের মুক্তির আভাস,

         অনাগত দেবতার আসন্ন আশ্বাস,

পুষ্পকোরকের বক্ষে অগোচর ফলের মতন।

     তুই কোলে এলি যবে অমূল্য রতন,

          অপূর্ব প্রভাতরবি,

     আশার অতীত যেন প্রত্যাশার ছবি—

          লভিলাম আপনার পূর্ণতারে

                 কাঙাল সংসারে।

 

             প্রাণের রহস্য সুগভীর

                অন্তরগুহায় ছিল স্থির,

সে আজ বাহির হল দেহ লয়ে উন্মুক্ত আলোতে

                        অন্ধকার হতে ;

             সুদীর্ঘকালের পথে

                      চলিল সুদূর ভবিষ্যতে।

যে আনন্দ আজি মোর শিরায় শিরায় বহে

                গৃহের কোণের তাহা নহে।

          আমার হৃদয় আজি পান্থশালা,

                     প্রাঙ্গণে হয়েছে দীপ জ্বালা।

         হেথা কারে ডেকে আনিলাম

 অনাদিকালের পান্থ কিছুকাল করিবে বিশ্রাম।

       এ বিশ্বের যাত্রী যারা চলে অসীমের পানে

          আকাশে আকাশে নৃত্যগানে—

      আমার শিশুর মুখে কলকোলাহলে