ভজহরি
হংকঙেতে সারাবছর আপিস করেন মামা,
সেখান থেকে এনেছিলেন চীনের দেশের শ্যামা,
             দিয়েছিলেন মাকে,
ঢাকার নীচে যখন-তখন শিস দিয়ে সে ডাকে।
নিচিনপুরের বনের থেকে ঝুলির মধ্যে ক ' রে
              ভজহরি আনত ফড়িঙ ধরে।
পাড়ায় পাড়ায় যত পাখি খাঁচায় খাঁচায় ঢাকা
আওয়াজ শুনেই উঠত নেচে, ঝাপট দিত পাখা।
কাউকে ছাতু, কাউকে পোকা, কাউকে দিত ধান,
অসুখ করলে হলুদজলে করিয়ে দিত স্নান।
ভজু বলত, “ পোকার দেশে আমিই হচ্ছি দত্যি,
আমার ভয়ে গঙ্গাফড়িঙ ঘুমোয় না একরত্তি।
ঝোপে ঝোপে শাসন আমার কেবলই ধরপাকড়,
পাতায় পাতায় লুকিয়ে বেড়ায় যত পোকামাকড়। ”
 
একদিন সে ফাগুন মাসে মাকে এসে বলল,
“ গোধূলিতে মেয়ের আমার বিয়ে হবে কল্য। ”
               শুনে আমার লাগল ভারি মজা,
                    এই আমাদের ভজা,
এরও আবার মেয়ে আছে, তারও হবে বিয়ে,
              রঙিন চেলির ঘোমটা মাথায় দিয়ে।
শুধাই তাকে, “ বিয়ের দিনে খুব বুঝি ধুম হবে?”
ভজু বললে, “ খাঁচার রাজ্যে নইলে কি মান রবে।
কেউবা ওরা দাঁড়ের পাখি, পিঁজরেতে কেউ থাকে,
নেমন্তন্ন চিঠিগুলো পাঠিবে দেব ডাকে।
মোটা মোটা ফড়িঙ দেব, ছাতুর সঙ্গে দই,
ছোলা আনব ভিজিয়ে জলে, ছড়িয়ে দেব খই।
              এমনি হবে ধুম,
সাত পাড়াতে চক্ষে কারও রইবে না আর ঘুম।
ময়নাগুলোর খুলবে গলা, খাইয়ে দেব লঙ্কা;