৩০

ভারতের কোন্‌ বৃদ্ধ ঋষির তরুণ মূর্তি তুমি

হে আর্য আচার্য জগদীশ। কী অদৃশ্য তপোভূমি

বিরচিলে এ পাষাণনগরীর শুষ্ক ধূলিতলে।

কোথা পেলে সেই শান্তি এ উন্মত্ত জনকোলাহলে

যার তলে মগ্ন হয়ে মুহূর্তে বিশ্বের কেন্দ্র - মাঝে

দাঁড়াইলে একা তুমি — এক যেথা একাকী বিরাজে

সূর্যচন্দ্র পুষ্পপত্র - পশুপক্ষী - ধুলায় - প্রস্তরে —

এক তন্দ্রাহীন প্রাণ নিত্য যেথা নিজ অঙ্ক - ' পরে

দুলাইছে চরাচর নিঃশব্দ সংগীতে। মোরা যবে

মত্ত ছিনু অতীতের অতিদূর নিষ্ফল গৌরবে —

পরবস্ত্রে, পরবাক্যে, পরভঙ্গিমার ব্যঙ্গরূপে

কল্লোল করিতেছিনু স্ফীতকন্ঠে ক্ষুদ্র অন্ধকূপে —

তুমি ছিলে কোন্‌ দূরে। আপনার স্তব্ধ ধ্যানাসন

কোথায় পাতিয়াছিলে। সংযত গম্ভীর করি মন

ছিলে রত তপস্যায় অরূপরশ্মির অন্বেষণে

লোকলোকান্তের অন্তরালে — যেথা পূর্ব ঋষিগণে

বহুত্বের সিংহদ্বার উদ্‌ঘাটিয়া একের সাক্ষাতে

দাঁড়াতেন বাক্যহীন স্তম্ভিত বিস্মিত জোড়হাতে।

হে তপস্বী, ডাকো তুমি সামমন্ত্রে জলদগর্জনে,

‘ উত্তিষ্ঠত নিবোধত! ' ডাকো শাস্ত্র - অভিমানী জনে

পাণ্ডিত্যের পণ্ডতর্ক হতে। সুবৃহৎ বিশ্বতলে

ডাকো মূঢ় দাম্ভিকেরে। ডাক দাও তব শিষ্যদলে,

একত্রে দাঁড়াক তারা তব হোমহুতাগ্নি ঘিরিয়া।

আরবার এ ভারত আপনাতে আসুক ফিরিয়া

নিষ্ঠায়, শ্রদ্ধায়, ধ্যানে — বসুক সে অপ্রমত্তচিতে

লোভহীন দ্বন্দ্বহীন শুদ্ধ শান্ত গুরুর বেদীতে