কুঁড়ির ভিতর কাঁদিছে গন্ধ অন্ধ হয়ে —

                 কাঁদিছে আপন মনে,

             কুসুমের দলে বন্ধ হয়ে

                 করুণ কাতর স্বনে।

                 কহিছে সে, ‘ হায় হায়,

            বেলা যায় বেলা যায় গো

                  ফাগুনের বেলা যায়। '

     ভয় নাই তোর, ভয় নাই ওরে ভয় নাই,

                  কিছু নাই তোর ভাবনা।

             কুসুম ফুটিবে, বাঁধন টুটিবে,

                 পুরিবে সকল কামনা।

             নিঃশেষ হয়ে যাবি যবে তুই

                 ফাগুন তখনো যাবে না।

 

       কুঁড়ির ভিতরে ফিরিছে গন্ধ কিসের আশে —

                   ফিরিছে আপনমাঝে,

              বাহিরিতে চায় আকুল শ্বাসে

                    কী জানি কিসের কাজে।

                   কহিছে সে, ‘ হায় হায়,

             কোথা আমি যাই, কারে চাই গো

                   না জানিয়া দিন যায়। '

       ভয় নাই তোর, ভয় নাই ওরে, ভয় নাই,

                   কিছু নাই তোর ভাবনা।

            দখিনপবন দ্বারে দিয়া কান

                   জেনেছে রে তোর কামনা।

            আপনারে তোর না করিয়া ভোর

                   দিন তোর চলে যাবে না।

       কুঁড়ির ভিতরে আকুল গন্ধ ভাবিছে বসে —

                   ভাবিছে উদাসপারা,

            ‘ জীবন আমার কাহার দোষে

                    এমন অর্থহারা। '