পুনশ্চ

  বৃষ্টি পড়ে ঝমাঝম। একে একে

পুকুরের পৈঁঠা যায় জলে ডুবে।

        আরো বৃষ্টি, আরো বৃষ্টি, আরো বৃষ্টি।

রাত্তির হয়ে আসে, শুতে যাই বিছানায়,

        খোলা জানলা দিয়ে গন্ধ পাই ভিজে জঙ্গলের।

               উঠোনে একহাঁটু জল,

ছাদের নালার মুখ থেকে জলে পড়ছে জল মোটা ধারায়।

           ভোরবেলায় ছুটেছি দক্ষিণের জানলায়,

                   পুকুর গেছে ভেসে;

        জল বেরিয়ে চলেছে কল্‌কল্‌ করে বাগানের উপর দিয়ে,

    জলের উপর বেলগাছগুলোর ঝাঁকড়া মাথা জেগে থাকে।

পাড়ার লোকে হৈ হৈ করে এসেছে

        গামছা দিয়ে ধুতির কোঁচা দিয়ে মাছ ধরতে।

           কাল পর্যন্ত পুকুরটা ছিল আমারি মতো বাঁধা,

    এ বেলা ও বেলা তার উপরে পড়ত গাছের ছায়া,

           উড়ো মেঘ জলে বুলিয়ে যেত ক্ষণিকের ছায়াতুলি,

    বটের ডালের ভিতর দিয়ে যেন সোনার পিচকারিতে

              ছিটকে পড়ত তার উপরে আলো —

           পুকুরটা চেয়ে থাকত আকাশে ছল্‌ছলে দৃষ্টিতে।

              আজ তার ছুটি, কোথায় সে চলল খ্যাপা

                       গেরুয়া-পরা বাউল যেন।

          পুকুরের কোণে নৌকোটি

              দাদারা চড়ে বসল ভাসিয়ে দিয়ে,

                 গেল পুকুর থেকে গলির মধ্যে,

                     গলির থেকে সদর রাস্তায় —

তার পরে কোথায় জানি নে। বসে বসে ভাবি।

         

            বেলা বাড়ে।

    দিনান্তের ছায়া মেশে মেঘের ছায়ায়,

           তার সঙ্গে মেশে পুকুরের জলে বটের ছায়ার কালিমা।

                   সন্ধে হয়ে এল।

    বাতি জ্বলল ঝাপসা আলোয় রাস্তার ধারে ধারে,