প্রহাসিনী

তাদের মিলনে কোনো ক্ষণিকের নেশা নেই।

জীবনের সন্ধ্যায় তাহাদেরি বরণে

শেষ রবিরেখা রবে সোনা-আঁকা স্মরণে।

সুর-সুরধুনীধারে যে অমৃত উথলে

মাঝে মাঝে কিছু তার ঝ’রে পড়ে ভূতলে,

এ জনমে সে কথা জানার সম্ভাবনা

কেমনে ঘটিবে যদি সাক্ষাৎ পাব না।

  আমাদের কত ত্রুটি আসনে ও শয়নে,

ক্ষমা ছিল চিরদিন তাহাদের নয়নে।

প্রেমদীপ জ্বেলেছিল পুণ্যের আলোকে,

মধুর করেছে তারা যত কিছু ভালোকে।

নানারূপে ভোগসুধা যা করেছে বরষন

তারে শুচি করেছিল সুকুমার পরশন।

দামি যাহা মিলিয়াছে জীবনের এ পারে

মরণের তীরে তারে নিয়ে যেতে কে পারে।

তবু মনে আশা করি মৃত্যুর রাতেও

তাহাদেরি প্রেম যেন নিতে পারি পাথেয়।

আর বেশি কাজ নেই, গেছে কেটে তিনকাল,

যে কালে এসেছি আজ সে কালটা সিনিকাল!

কিছু আছে যার লাগি সুগভীর নিশ্বাস

জেগে ওঠে — ঢাকা থাক্‌ তার প্রতি বিশ্বাস।

 

একটু সবুর করো, আরো কিছু বলে যাই,

কথার চরম পারে তার পরে চলে যাই।

যে গিয়েছে তার লাগি খুঁচিয়ো না চেতনা,

ছায়ারে অতিথি ক’রে আসনটা পেতো না।

বৎসরে বৎসরে শোক করা রীতিটার।

মিথ্যার ধাক্কায় ভিত ভাঙে স্মৃতিটার।

ভিড় ক’রে ঘটা-করা ধরা-বাঁধা বিলাপে

পাছে কোনো অপরাধ ঘটে প্রথা-খিলাপে,

ভারতে ছিল না লেশ এই-সব খেয়ালের —

কবি-’পরে ভার ছিল নিজ মেমোরিয়ালের।