২১

সকালে জাগিয়া উঠি

ফুলদানে দেখিনু গোলাপ ;

প্রশ্ন এল মনে —

যুগ-যুগান্তের আবর্তনে

সৌন্দর্যের পরিণামে যে শক্তি তোমারে আনিয়াছে

অপূর্ণের কুৎসিতের প্রতি পদে পীড়ন এড়ায়ে,

সে কি অন্ধ, সে কি অন্যমনা,

সেও কি বৈরাগ্যব্রতী সন্ন্যাসীর মতো

সুন্দরে ও অসুন্দরে ভেদ নাহি করে —

শুধু জ্ঞানক্রিয়া, শুধু বলক্রিয়া তার,

বোধের নাইকো কোনো কাজ?

কারা তর্ক করে বলে, সৃষ্টির সভায়

সুশ্রী কুশ্রী বসে আছে সমান আসনে —

প্রহরীর কোনো বাধা নাই।

আমি কবি তর্ক নাহি জানি,

এ বিশ্বেরে দেখি তার সমগ্র স্বরূপে —

লক্ষকোটি গ্রহতারা আকাশে আকাশে

বহন করিয়া চলে প্রকাণ্ড সুষমা,

ছন্দ নাহি ভাঙে তার সুর নাহি বাধে,

বিকৃতি না ঘটায় স্খলন ;

ঐ তো আকাশে দেখি স্তরে স্তরে পাপড়ি মেলিয়া

জ্যোতির্ময় বিরাট গোলাপ।