আকাশপ্রদীপ

                    সেখানে ওর পিঁড়ে পাতা মাটির কাছে।

                          ও ভালোবাসে কাঁচা আম খেতে

                       শুল্পো শাক আর লঙ্কা দিয়ে মিশিয়ে।

           প্রসাদলাভের একটি ছোট্ট দরজা খোলা আছে

                আমার মতো ছেলে আর ছেলেমানুষের জন্যেও।

 

                        গাছে চড়তে ছিল কড়া নিষেধ।

                          হাওয়া দিলেই ছুটে যেতুম বাগানে,

                       দৈবে যদি পাওয়া যেত একটিমাত্র ফল

                          একটুখানি দুর্লভতার আড়াল থেকে,

                       দেখতুম, সে কী শ্যামল, কী নিটোল, কী সুন্দর,

                          প্রকৃতির সে কী আশ্চর্য দান।

                       যে লোভী চিরে চিরে ওকে খায়

                          সে দেখতে পায় নি ওর অপরূপ রূপ।

 

           একদিন শিলবৃষ্টির মধ্যে আম কুড়িয়ে এনেছিলুম ;

               ও বলল, “ কে বলেছে তোমাকে আনতে। ”

                       আমি বললুম, “ কেউ না। ”

                   ঝুড়িসুদ্ধ মাটিতে ফেলে চলে গেলুম।

           আর-একদিন মৌমাছিতে আমাকে দিলে কামড়ে ;

                   সে বললে, “ এমন করে ফল আনতে হবে না। ”

                          চুপ করে রইলুম।

 

                                বয়স বেড়ে গেল।

           একদিন সোনার আংটি পেয়েছিলুম ওর কাছ থেকে ;

               তাতে স্মরণীয় কিছু লেখাও ছিল।

           স্নান করতে সেটা পড়ে গেল গঙ্গার জলে —

                   খুঁজে পাই নি।

           এখনো কাঁচা আম পড়ছে খসে খসে

               গাছের তলায়, বছরের পর বছর।

                   ওকে আর খুঁজে পাবার পথ নেই।