ময়ূরের দৃষ্টি

            দক্ষিণায়নের সূর্যোদয় আড়াল ক'রে

                                  সকালে বসি চাতালে।

                          অনুকূল অবকাশ ;

               তখনো নিরেট হয়ে ওঠে নি কাজের দাবি,

                          ঝুঁকে পড়ে নি লোকের ভিড়

                                   পায়ে পায়ে সময় দলিত করে দিয়ে।

                                        লিখতে বসি,

                                  কাটা খেজুরের গুঁড়ির মতো

               ছুটির সকাল কলমের ডগায় চুঁইয়ে দেয় কিছু রস।

 

                     আমাদের ময়ূর এসে পুচ্ছ নামিয়ে বসে

                                  পাশের রেলিংটির উপর।

                     আমার এই আশ্রয় তার কাছে নিরাপদ,

         এখানে আসে না তার বেদরদী শাসনকর্তা বাঁধন হাতে।

               বাইরে ডালে ডালে কাঁচা আম পড়েছে ঝুলে,

                     নেবু ধরেছে নেবুর গাছে,

                          একটা একলা কুড়চিগাছ

               আপনি আশ্চর্য আপন ফুলের বাড়াবাড়িতে।

                                  প্রাণের নিরর্থক চাঞ্চল্যে

                          ময়ূরটি ঘাড় বাঁকায় এদিকে ওদিকে।

                                   তার উদাসীন দৃষ্টি

               কিছুমাত্র খেয়াল করে না আমার খাতা-লেখায় ;

         করত, যদি অক্ষরগুলো হত পোকা ;

               তা হলে নগণ্য মনে করত না কবিকে।

         হাসি পেল ওর ওই গম্ভীর উপেক্ষায়,

               ওরই দৃষ্টি দিয়ে দেখলুম আমার এই রচনা।

                     দেখলুম, ময়ূরের চোখের ঔদাসীন্য

                                  সমস্ত নীল আকাশে,

               কাঁচা-আম-ঝোলা গাছের পাতায় পাতায়,

                          তেঁতুলগাছের গুঞ্জনমুখর মৌচাকে।