আকাশপ্রদীপ

                     একেবারে বিরুদ্ধ কি দোঁহে।

                          আকাশের আলো

             বিপরীতে-ভাগ-করা সে কি সাদা কালো।

                 ওই আলো আপনার পূর্ণতারে চূর্ণ করে

                          দিকে দিগন্তরে,

                            বর্ণে বর্ণে

                     তৃণে শস্যে পুষ্পে পর্ণে,

                  পাখির পাখায় আর আকাশের নীলে,

             চোখ ভোলাবার মোহ মেলে দেয় সর্বত্র নিখিলে।

                 অভাব যেখানে এই মন-ভোলাবার

                     সেইখানে সৃষ্টিকর্তা বিধাতার হার।

                         এমন লজ্জার কথা বলিতেও নাই —

                  তোমরা ভোল না শুধু ভুলি আমরাই।

                         এই কথা স্পষ্ট দিনু কয়ে,

             সৃষ্টি কভু নাহি ঘটে একেবারে বিশুদ্ধেরে লয়ে।

                 পূর্ণতা আপন কেন্দ্রে স্তব্ধ হয়ে থাকে,

                     কারেও কোথাও নাহি ডাকে।

             অপূর্ণের সাথে দ্বন্দ্বে চাঞ্চল্যের শক্তি দেয় তারে,

                     রসে রূপে বিচিত্র আকারে।

                         এরে নাম দিয়ে মোহ

                                      যে করে বিদ্রোহ

                 এড়ায়ে নদীর টান সে চাহে নদীরে,

                          পড়ে থাকে তীরে।

                     পুরুষ সে ভাবের বিলাসী,

             মোহতরী বেয়ে তাই সুধাসাগরের প্রান্তে আসি

                 আভাসে দেখিতে পায় পরপারে অরূপের মায়া

                         অসীমের ছায়া।

             অমৃতের পাত্র তার ভরে ওঠে কানায় কানায়

                         স্বল্প জানা ভূরি অজানায়। ”

 

                 কোনো কথা নাহি ব ' লে

             সুন্দরী ফিরায়ে মুখ দ্রুত গেল চলে।