মংপু পাহাড়ে

কুজ্‌ঝটিজাল যেই

             সরে গেল মংপু-র

নীল শৈলের গায়ে

             দেখা দিল রঙপুর।

বহুকেলে জাদুকর, খেলা বহুদিন তার,

আর কোনো দায় নেই, লেশ নেই চিন্তার।

দূর বৎসর-পানে ধ্যানে চাই যদ্‌দূর

দেখি লুকোচুরি খেলে মেঘ আর রোদ্‌দুর।

কত রাজা এল গেল, ম’ল এরই মধ্যে,

লড়েছিল বীর, কবি লিখেছিল পদ্যে।

কত মাথা-কাটাকাটি সভ্যে অসভ্যে,

কত মাথা-ফাটাফাটি সনাতনে নব্যে।

ওই গাছ চিরদিন যেন শিশু মস্ত,

সূর্য-উদয় দেখে, দেখে তার অস্ত।

ওই ঢালু গিরিমালা, রুক্ষ ও বন্ধ্যা,

দিন গেলে ওরই ’পরে জপ করে সন্ধ্যা।

নীচে রেখা দেখা যায় ঐ নদী তিস্তার,

কঠোরের স্বপ্নে ও মধুরের বিস্তার।

হেনকালে একদিন বৈশাখী গ্রীষ্মে

টানাপাখা-চলা সেই সেকালের বিশ্বে

রবিঠাকুরের দেখা সেইদিন মাত্তর,

আজি তো বয়স তার কেবল আটাত্তর —

সাতের পিঠের কাছে একফোঁটা শূন্য,

শত শত বরষের ওদের তারুণ্য।

ছোটো আয়ু মানুষের, তবু একি কাণ্ড,

এটুকু সীমায় গড়া মনোব্রহ্মাণ্ড —

কত সুখে দুখে গাঁথা, ইষ্টে অনিষ্টে,

সুন্দর কুৎসিতে, তিক্তে ও মিষ্টে,

কত গৃহ-উৎসবে, কত সভাসজ্জায়,

কত রসে মজ্জিত অস্থি ও মজ্জায়,