প্রবাহিনী
দুর্গম দূর শৈলশিরের
      স্তব্ধ তুষার নই তো আমি,
আপনহারা ঝরনা-ধারা
      ধূলির ধরায় যাই যে নামি।
সরোবরের গম্ভীরতায়
      ফেনিল নাচের মাতন ঢালি,
অচল শিলার ভ্রূভঙ্গিমায়
      বাজাই চপল করতালি।
মন্দ্রসুরের মন্ত্র শুনাই
      গভীর গুহার আঁধার-তলে,
গহন বনের ভাঙাই ধেয়ান
      উচ্চহাসির কোলাহলে।
শুভ্র ফেনের কুন্দমালায়
      বিন্ধ্যগিরির বক্ষ সাজাই,
যোগীশ্বরের জটার মধ্যে
      তরঙ্গিণীর নূপুর বাজাই।
বৃদ্ধ বটের লুব্ধ শিকড়
      আমার বেণী ধরিতে চায়,
সূর্যকিরণ শিশুর মতন
      অঙ্ক আমার ভরিতে চায়।
নাই কোনো মোর ভয় ভাবনা,
      নাই কোনো মোর অচল রীতি।
গতি আমার সকল দিকেই,
      শুভ আমার সকল তিথি।
বক্ষে আমার কালোর ধারা,
      আলোর ধারা আমার চোখে—
স্বর্গে আমার সুর চলে যায়,
      নৃত্য আমার মর্তলোকে।
অশ্রুহাসির যুগল ধারা
       ছোটে আমার ডাইনে বামে।
অচল গানের সাগরমাঝে
       চপল গানের যাত্রা থামে।