সানাই

     যখন নৃপতি ছিল উচ্ছৃঙ্খল উন্মত্তের মতো

          দয়াহীন ছলনায় রত

               আমি কবি অনাবিল সরল মাধুরী

                   করিতেছিলাম চুরি

                  এলা-বনচ্ছায়ে এক কোণে,

              মধুকর যেমন গোপনে

                   ফুলমধু লয় হরি

             নিভৃত ভান্ডার ভরি ভরি

                   মালতীর স্মিত সম্মতিতে।

             ছিল সে গাঁথিতে

                   নতশিরে পুষ্পহার

             সদ্য-তোলা কুঁড়ি মল্লিকার।

          বলেছিনু, আমি দেব ছন্দের গাঁথুনি

                   কথা চুনি চুনি।

 

                    অয়ি মালবিকা

অভিসার-যাত্রাপথে কখনো বহ নি দীপশিখা।

     অর্ধাবগুণ্ঠিত ছিলে কাব্যে শুধু ইঙ্গিত-আড়ালে,

               নিঃশবদে চরণ বাড়ালে

          হৃদয়প্রাঙ্গণে আজি স্পষ্ট আলোকে —

                 বিস্মিত চাহনিখানি বিস্ফারিত কালো দুটি চোখে,

                   বহু মৌনী শতাব্দীর মাঝে দেখিলাম —

                             প্রিয় নাম

                   প্রথম শুনিলে বুঝি কবিকণ্ঠস্বরে

                              দূর যুগান্তরে।

                        বোধ হল, তুলে ধ ' রে ডালা

                   মোর হাতে দিলে তব আধফোটা মল্লিকার মালা।

সুকুমার অঙ্গুলির ভঙ্গীটুকু মনে ধ্যান ক ' রে

       ছবি আঁকিলাম বসে চৈত্রের প্রহরে।

    স্বপ্নের বাঁশিটি আজ ফেলে তব কোলে

                          আর-বার যেতে হবে চ ' লে  

                  সেথা, যেথা বাস্তবের মিথ্যা বঞ্চনায়

                             দিন চলে যায়।