সানাই

          আকাশকুসুম-কুঞ্জবনে,

 

                   দিগঙ্গনে

          ভিত্তিহীন যে-বাসা আমার

     সেখানেই পলাতকা আসা-যাওয়া করে বার-বার।

          আজি এই চৈত্রের খেয়ালে

               মনেরে জড়ালো ইন্দ্রজালে।

                   দেশকাল

          ভুলে গেল তার বাঁধা তাল।

      নায়িকা আসিল নেমে আকাশপ্রদীপে আলো পেয়ে।

                   সেই মেয়ে

               নহে বিংশ-শতকিয়া

     ছন্দোহারা কবিদের ব্যঙ্গহাসি-বিহসিত প্রিয়া।

          সে নয় ইকনমিক্‌স্‌-পরীক্ষাবাহিনী

আতপ্ত বসন্তে আজি নিশ্বসিত যাহার কাহিনী।

               অনসূয়া নাম তার, প্রাকৃতভাষায়

কারে সে বিস্মৃত যুগে কাঁদায় হাসায়,

          অশ্রুত হাসির ধ্বনি মিলায় সে কলকোলাহলে

                   শিপ্রাতটতলে।

     পিনদ্ধ বল্কলবন্ধে যৌবনের বন্দী দূত দোঁহে

               জাগে অঙ্গে উদ্ধত বিদ্রোহে।

          অযতনে এলায়িত রুক্ষ কেশপাশ        

বনপথে মেলে চলে মৃদুমন্দ গন্ধের আভাস।

               প্রিয়কে সে বলে, ‘ পিয় ',

                   বাণী লোভনীয় —

               এনে দেয় রোমা ঞ্চ -হরষ

                   কোমল সে ধ্বনির পরশ।

               সোহাগের নাম দেয় মাধবীরে

                    আলিঙ্গনে ঘিরে,

               এ মাধুরী যে দেখে গোপনে

                   ঈর্ষার বেদনা পায় মনে।