পূরবী
তাই তো কবির চিত্তে কল্পলোকে টুটিল অর্গল
            বেদনার বেগে,
মানসতরঙ্গতলে বাণীর সংগীতশতদল
            নেচে ওঠে জেগে।
সুপ্তির তিমিরবক্ষ দীর্ণ করে তেজস্বী তাপস
            দীপ্তির কৃপাণে;
বীরের দক্ষিণ হস্ত মুক্তিমন্ত্রে বজ্র করে বশ,
            অসত্যেরে হানে।

 

হে অভিসারিকা, তব বহুদূর পদধ্বনি লাগি
            আপনার মনে
বাণীহীন প্রতীক্ষায় আমি আজ একা বসে জাগি
            নির্জন প্রাঙ্গণে।
দীপ চাহে তব শিখা, মৌনী বীণা ধেয়ায় তোমার
            অঙ্গুলিপরশ।
তারায় তারায় খোঁজে তৃষ্ণায়-আতুর অন্ধকার
            সঙ্গসুধারস।

 

নিদ্রাহীন বেদনায় ভাবি কবে আসিবে পরানে
            চরম আহ্বান।
মনে জানি এ জীবনে সাঙ্গ হয় নাই পূর্ণ তানে
            মোর শেষ গান।
কোথা তুমি, শেষবার যে ছোঁয়াবে তব স্পর্শমণি
            আমার সংগীতে।
মহানিস্তব্ধের প্রান্তে কোথা বসে রয়েছ রমণী
            নীরব নিশীথে।

 

মহেন্দ্রের বজ্র হতে কালো চক্ষে বিদ্যুতের আলো
            আনো আনো ডাকি—
বর্ষণ-কাঙাল মোর মেঘের অন্তরে বহ্নি জ্বালো
            হে কালবৈশাখী।
অশ্রুভারে ক্লান্ত তার স্তব্ধ মূক অবরুদ্ধ দান