পূরবী
            চলে যায় ডাকি।
অমনি প্রভাত তার বীণা হাতে বাহিরিয়া আসে,
            শূন্য ভরে গানে;
ঐশ্বর্য ছড়ায়ে দেয় মুক্তহস্তে আকাশে আকাশে,
            ক্লান্তি নাহি জানে।

 

কোন্‌ জ্যোতির্ময়ী হোথা অমরাবতীর বাতায়নে
            রচিতেছে গান
আলোকের বর্ণে বর্ণে; নির্নিমেষ উদ্দীপ্ত নয়নে
            করিছে আহ্বান।
তাই তো চাঞ্চল্য জাগে মাটির গভীর অন্ধকারে
            রোমাঞ্চিত তৃণে।
ধরণী ক্রন্দিয়া উঠে, প্রাণস্পন্দ ছুটে চারি ধারে
            বিপিনে বিপিনে।

 

তাই তো গোপন ধন খুঁজে পায় অকিঞ্চন ধূলি
            নিরুদ্ধ ভাণ্ডারে।
বর্ণে গন্ধে রূপে রসে আপনার দৈন্য যায় ভুলি
            পত্রপুষ্পভারে।
দেবতার প্রাথর্নায় কার্পণ্যের বন্ধ মুষ্টি খুলে,
            রিক্ততারে টুটি
রহস্যসমুদ্রতল উন্মথিয়া উঠে উপকূলে
            রত্ন মুঠি মুঠি।

 

তুমি সে আকাশভ্রষ্ট প্রবাসী আলোক, হে কল্যাণী,
            দেবতার দূতী।
মর্তের গৃহের প্রান্তে বহিয়া এনেছে তব বাণী
            স্বর্গের আকূতি।
ভঙ্গুর মাটির ভাণ্ডে গুপ্ত আছে যে অমৃতবারি
            মৃত্যুর আড়ালে,
দেবতার হয়ে হেথা তাহারি সন্ধানে তুমি, নারী,
            দু বাহু বাড়ালে।