সাথি

        তখন বয়স সাত।

                  মুখচোরা ছেলে,

      একা একা আপনারি সঙ্গে হত কথা।

                       মেঝে বসে

      ঘরের গরাদেখানা ধরে

           বাইরের দিকে চেয়ে চেয়ে

                 বয়ে যেত বেলা।

      দূরে থেকে মাঝে-মাঝে ঢঙ ঢঙ করে

           বাজত ঘণ্টার ধ্বনি,

           শোনা যেত রাস্তা থেকে সইসের হাঁক।

      হাঁসগুলো কলরবে ছুটে এসে নামত পুকুরে।

           ও পাড়ার তেলকলে বাঁশি ডাক দিত।

           গলির মোড়ের কাছে দত্তদের বাড়ি,

      কাকাতুয়া মাঝে-মাঝে উঠত চীৎকার করে ডেকে।

           একটা বাতাবিলেবু, একটা অশথ,

      একটা কয়েতবেল, একজোড়া নারকেলগাছ,

           তারাই আমার ছিল সাথি।

          আকাশে তাদের ছুটি অহরহ,

           মনে-মনে সে ছুটি আমার।

      আপনারি ছায়া নিয়ে

           আপনার সঙ্গে যে খেলাতে

                 তাদের কাটত দিন

                    সে আমারি খেলা।

                        তারা চিরশিশু

                 আমার সমবয়সী।

           আষাঢ়ে বৃষ্টির ছাঁটে, বাদল-হাওয়ায়,

                 দীর্ঘ দিন অকারণে

           তারা যা করেছে কলরব,

                 আমার বালকভাষা

                     হো - হো শব্দ করে