জরতী

       হে জরতী,

           অন্তরে আমার

                 দেখেছি তোমার ছবি।

   অবসানরজনীতে দীপবর্তিকার

           স্থিরশিখা আলোকের আভা

               অধরে ললাটে — শুভ্র কেশে।

   দিগন্তে প্রণামনত শান্ত-আলো প্রত্যুষের তারা

                 মুক্ত বাতায়ন থেকে

           পড়েছে নিমেষহীন নয়নে তোমার।

                 সন্ধ্যাবেলা

           মল্লিকার মালা ছিল গলে,

               গন্ধ তার ক্ষীণ হয়ে

                 বাতাসকে করুণ করেছে —

 

      উৎসবশেষের যেন অবসন্ন অঙ্গুলির

                 বীণাগুঞ্জরণ।

              শিশিরমন্থর বায়ু,

           অশথের শাখা অকম্পিত।

      অদূরে নদীর শীর্ণ স্বচ্ছ ধারা কলশব্দহীন,

            বালুতটপ্রান্তে চলে ধীরে

                 শূন্যগৃহ-পানে

      ক্লান্তগতি বিরহিণী বধূর মতন।

 

      হে জরতী মহাশ্বেতা,

                   দেখেছি তোমাকে

            জীবনের শারদ অম্বরে

      বৃষ্টিরিক্ত শুচিশুক্ল লঘু স্বচ্ছ মেঘে।

           নি ম্নে শস্যে ভরা খেত দিকে দিকে,

                   নদী ভরা কূলে কূলে,

           পূর্ণতার স্তব্ধতায় বসুন্ধরা স্নিগ্ধ সুগম্ভীর।