বসন্ত

অযুত বৎসর আগে হে বসন্ত, প্রথম ফাল্গুনে

              মত্ত কুতূহলী,

প্রথম যেদিন খুলি নন্দনের দক্ষিণ-দুয়ার

              মর্তে এলে চলি,

অকস্মাৎ দাঁড়াইলে মানবের কুটিরপ্রাঙ্গণে

              পীতাম্বর পরি,

উতলা উত্তরী হতে উড়াইয়া উন্মাদ পবনে

              মন্দারমঞ্জরী,

দলে দলে নরনারী ছুটে এল গৃহদ্বার খুলি

              লয়ে বীণা বেণু—

মাতিয়া পাগল নৃত্যে হাসিয়া করিল হানাহানি

              ছুঁড়ি পুষ্পরেণু।

সখা, সেই অতিদূর সদ্যোজাত আদি মধুমাসে

              তরুণ ধরায়

এনেছিলে যে কুসুম ডুবাইয়া তপ্ত কিরণের

              স্বর্ণমদিরায়,

সেই পুরাতন সেই চিরন্তন অনন্ত প্রবীণ

              নব পুষ্পরাজি

বর্ষে বর্ষে আনিয়াছ— তাই লয়ে আজো পুনর্বার

              সাজাইলে সাজি।

তাই সে পুষ্পে লিখা জগতের প্রাচীন দিনের

              বিস্মৃত বারতা,

তাই তার গন্ধে ভাসে ক্লান্ত লুপ্ত লোকলোকান্তের

              কান্ত মধুরতা।

 

 

তাই আজি প্রস্ফুটিত নিবিড় নিকুঞ্জবন হতে

              উঠিছে উচ্ছ্বাসি

লক্ষ দিনযামিনীর যৌবনের বিচিত্র বেদনা,

              অশ্রু গান হাসি।