মানসী
সেই      ছায়াতে বসিয়া সারা দিনমান
                 তরুমর্মর পবনে,
সেই      মুকুল-আকুল বকুলকুঞ্জ-
                 ভবনে,
সেই      কুহুকুহরিত বিরহরোদন
                 থেকে থেকে পশে শ্রবণে।

 

সেই      চিরকলতান উদার গঙ্গা
                 বহিছে আঁধারে আলোকে,
সেই      তীরে চিরদিন খেলিছে বালিকা-
                 বালকে।
ধীরে     সারা দেহ যেন মুদিয়া আসিছে
                 স্বপ্নপাখির পালকে।

 

হায়,     অতৃপ্ত যত মহৎ বাসনা
                 গোপনমর্মদাহিনী,
এই       আপনা-মাঝারে শুষ্ক জীবন—
                 বাহিনী!
ওই       ভৈরবী দিয়া গাঁথিয়া গাঁথিয়া
                 রচিব নিরাশাকাহিনী

 

সদা       করুণ কন্ঠ কাঁদিয়া  গাহিবে—
                 ‘হল না, কিছুই হবে না।
এই       মায়াময় ভবে চিরদিন কিছু
                 রবে না।

কেহ     জীবনের যত গুরুভার ব্রত
                 ধুলি হতে তুলি লবে না।

 

‘এই     সংশয়মাঝে কোন্‌ পথে যাই,
                 কার তরে মরি খাটিয়া!
আমি     কার মিছে দুখে মরিতেছি বুক
                 ফাটিয়া!