সোনার তরী

    চলিয়াছে নিশিদিন কত ভারে ভার

    বৈকুণ্ঠের পথে। মধ্যপথে নরনারী

    অক্ষয় সে সুধারাশি করি কাড়াকাড়ি

    লইতেছে আপনার প্রিয়গৃহতরে

    যথাসাধ্য যে যাহার ; যুগে যুগান্তরে

    চিরদিন পৃথিবীতে যুবকযুবতী —

    নরনারী এমনি চঞ্চল মতিগতি।

 

 

  দুই পক্ষে মিলে একেবারে আত্মহারা

    অবোধ অজ্ঞান। সৌন্দর্যের দস্যু তারা

    লুটেপুটে নিতে চায় সব। এত গীতি ,

    এত ছন্দ, এত ভাবে উচ্ছ্বাসিত প্রীতি,

    এত মধুরতা দ্বারের সম্মুখ দিয়া

    বহে যায় — তাই তারা পড়েছে আসিয়া

    সবে মিলি কলরবে সেই সুধাস্রোতে।

    সমুদ্রবাহিনী সেই প্রেমধারা হতে

    কলস ভরিয়া তারা লয়ে যায় তীরে

    বিচার না করি কিছু, আপন কুটিরে

    আপনার তরে। তুমি মিছে ধর দোষ,

    সে সাধু পণ্ডিত, মিছে করিতেছ রোষ।

    যাঁর ধন তিনি ওই অপার সন্তোষে

    অসীম স্নেহের হাসি হাসিছেন বসে।