নববধূ

চলেছে উজান ঠেলি তরণী তোমার,

                দিক্‌প্রান্তে নামে অন্ধকার।

কোন্‌ গ্রামে যাবে তুমি, কোন্‌ ঘাটে হে বধূবেশিনী,

                 ওগো বিদেশিনী!

উৎসবের বাঁশিখানি কেন-যে কে জানে

ভরেছে দিনান্তবেলা ম্লান মুলতানে,

তোমারে পরালো সাজ মিলি সখীদল

                গোপনে মুছিয়া চক্ষুজল।

 

মৃদুস্রোত নদীখানি ক্ষীণ কলকলে

                স্তিমিত বাতাসে যেন বলে —

‘ কত বধূ গিয়েছিল কতকাল এই স্রোত বাহি

                 তীরপানে চাহি।

ভাগ্যের বিধাতা কোনো কহেন নি কথা,

নিস্তব্ধ ছিলেন চেয়ে লজ্জাভয়ে নতা

তরুণী কন্যার পানে, তরী-'পরে ছিলেন গোপনে

                তরুণীর কাণ্ডারীর সনে। '

 

কোন্‌ টানে জানা হতে অজানায় চলে

                আধো হাসি আধো অশ্রুজলে।

ঘর ছেড়ে দিয়ে তবে ঘরখানি পেতে হয় তারে

                অচেনার ধারে।

ওপারের গ্রাম দেখো আছে ওই চেয়ে,

বেলা ফুরাবার আগে চলো তরী বেয়ে,

ওই ঘাটে কত বধূ কত শত বর্ষ বর্ষ ধরি

                ভিড়ায়েছে ভাগ্যভীরু তরী।

 

জনে জনে রচি গেল কালের কাহিনী,

                অনিত্যের নিত্যপ্রবাহিনী।

জীবনের ইতিবৃত্তে নামহীন কর্ম-উপহার