ভাবিনী

ভাবিছ যে ভাবনা একা-একা

        দুয়ারে বসি চুপে চুপে,

সে যদি সম্মুখে দিত দেখা

        মূর্তি ধরি কোনো রূপে —

হয়তো দেখিতাম শুকতারা

                  দিবস পার হয়ে দিশাহারা

                  এসেছে সন্ধ্যার কিনারাতে

                           সাঁঝের তারাদের দলে,

                    উদাস স্মৃতিভরা আঁখিপাতে

                            উষার হিমকণা জলে।

 

হয়তো দেখিতাম, বাদলে যে

        শ্রাবণে এনেছিল বাণী

শরতে জলভার এল ত্যেজে

         শুভ্র সেই মেঘখানি।

             চলে সে সন্ন্যাসী দিশে দিশে

             রবির আলোকের পিয়াসী সে,

              আকাশ আপনারই লিপি লিখে

                       পড়িতে দিল যেন তারে,

             সে তাই চেয়ে চেয়ে অনিমিখে

                        বুঝিতে বুঝি নাহি পারে।

 

হয়তো দেখিতাম, রজনীতে

            সে যেন সুরহারা বীণা

বিজন দীপহীন দেহলিতে

           মৌন-মাঝে আছে লীনা।

                একদা বেজেছিল যে রাগিণী

                তারে সে ফিরে যেন নিল চিনি

               তারার কিরণের কম্পনে

                               নীরব আকাশের মাঝে,

                    সুদূর সুরসভা-অঙ্গনে

                                সুরের স্মৃতি যেথা বাজে।