মানসী
       অমরাবতী ত্যেজে          হৃদয়ে এসেছে যে,
                তাহারো চেয়ে সে যে মহীয়ান।

 

       পাছে    কুরূপ কভু তারে দেখিতে হয়
                কুরূপ দেহ-মাঝে উদিয়া,
       প্রাণের এক ধারে             দেহের পরপারে
                তাই তো রাখি তারে রুধিয়া।

 

    তাই    আঁখিতে প্রকাশিতে চাহি নে তারে,
                নীরবে থাকে তাই রসনা।
    মুখে সে চাহে যত             নয়ন করি নত,
                গোপনে মরে কত বাসনা।

 

    তাই    যদি সে কাছে আসে পালাই দূরে,
                আপন মনোআশা দলে যাই,
    পাছে সে মোরে দেখে         থমকি বলে “এ কে! ”
                দু হাতে মুখ ঢেকে চলে যাই।

 

     পাছে    নয়নে বচনে সে বুঝিতে পারে
                আমার জীবনের কাহিনী—
     পাছে সে মনে ভানে,        “এও কি প্রেম জানে!
                আমি তো এর পানে চাহি নি! ”

 

       তবে    পরানে ভালোবাসা কেন গো দিলে
                রূপ না দিলে যদি বিধি হে!
       পূজার তরে হিয়া          উঠে যে ব্যাকুলিয়া,
                পূজিব তারে গিয়া কী দিয়ে?