কল্পনা

দেখা দিল দ্বারপ্রান্তে সোপানের- ’পরে

সন্ধ্যার লক্ষ্মীর মতো সন্ধ্যাতারা করে।

অঙ্গর কুঙ্কুমগন্ধ কেশধূপবাস

ফেলিল সর্বাঙ্গে মোর উতলা নিশ্বাস।

প্রকাশিল অর্ধচ্যুত বসন-অন্তরে

চন্দনের পত্রলেখা বাম পয়োধরে।

       দাঁড়াইল প্রতিমার প্রায়

নগরগুঞ্জনক্ষান্ত নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়।

 

 

          মোরে হেরি প্রিয়া

ধীরে ধীরে দীপখানি দ্বারে নামাইয়া

আইল সম্মুখে— মোর হস্ত হস্ত রাখি

নীরবে শুধাল শুধু, সকরুণ আঁখি,

‘হে বন্ধু আছ তো ভালো?’ মুখে তার চাহি

কথা বলিবারে গেনু, কথা আর নাহি।

সে ভাষা ভুলিয়া গেছি, নাম দোঁহাকার

দুজনে ভাবিনু কত— মনে নাহি আর।

দুজনে ভাবিনু কত চাহি দোঁহা-পানে,

অঝোরে ঝরিল অশ্রু নিস্পন্দ নয়ানে।

 

 

দুজনে ভাবিনু কত দ্বারতরুতলে!

       নাহি জানি কখন কি ছলে

সুকোমল হাতখানি লুকাইল আসি

আমার দক্ষিণ করে কুলায়প্রত্যাশী

সন্ধ্যার পাখির মতো, মুখখানি তার

নতবৃন্তপদ্মসম এ বক্ষে আমার

নমিয়া পড়িল ধীরে, ব্যাকুল উদাস

নিঃশব্দে মিলিল আসি নিশ্বাসে নিশ্বাস।